আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে কিডনি অন্যতম।দেহের ভারসাম্য রক্ষায় কিডনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।কিডনিকে আমরা বাংলায় বৃক্ক বলে থাকি।প্রতিটা মানবদেহে দুটি করে কিডনি থাকে।

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার,কিডনি রোগের লক্ষণ,কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা,কিডনি রোগের ঔষধ কি,কিডনি রোগীর খাবার,কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা pdf,কিডনি রোগীদের খাবার তালিকা,


রক্তকে ফিল্টারিং বা নিষ্কাশন করে মূত্র তৈরি করা কিডনির কাজ।আমাদের শরীরে থাকা অতিরিক্ত বর্জ্য পদার্থ ও পানি নিষ্কাশন করে বাইরে বের করে দেয় কিডনি।আমাদের প্রতিদিনের খাওয়া খাদ্য হতে খনিজ পদার্থ রক্তে মিশাতে কিডনি কাজ করে।এছাড়াও নতুন রক্ত কণিকা তৈরিতে কিডনি কাজ করে।               

এই কিডনি অকার্যকর হয়ে গেলে কতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে তা আপনারা জানতে পেরেছেন।কিডনি অকার্যকর হয়ে গেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপ রোগকে 'নীরবঘাতক' বলা হয়।কারণ এসব রোগের প্রাথমিক অবস্থায় কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না।তাই অনেকে বুঝতে পারে না যে তার কিডনি রোগ রয়েছে।কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনি রোগ শনাক্ত করা হয়।

আজকে আমরা কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করব।এসব লক্ষণ আপনার থাকলে অবশ্যই ভালো ডাক্তারের কাছে গিয়ে শরীর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে হবে। 

কিডনি রোগের লক্ষণ 

কিডনিতে সমস্যা হলে প্রথম অবস্থায় কোনও লক্ষণ পাওয়া যায় না।কিডনি যখন ধীরে ধীরে অকার্যকর হতে শুরু করে তখন কিছু লক্ষণ আপনি দেখতে পারবেন তা নিচে দেওয়া হলোঃ

  • আপনার ক্ষুদা কমে যাবে।মানে আগের চেয়ে ধীরে ধীরে কম খাদ্য গ্রহণ করবেন
  • শরীরের বিভিন্ন অংশে পানি জমতে শুরু করবে।পানি জমার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ফুলে যাবে
  • শরীরের ওজন ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে শুরু করবে
  • প্রসাবের পরিমাণ কমে যাবে।কারণ কিডনি পানি নিষ্কাশন বেশি করতে পারবে না।ফলে পানি ফুসফুসে আটকে যাবে।ঘন ঘন প্রসাব করতে যাবেন কিন্তু প্রসাব তেমন একটা বের হবে না 
  • প্রসাবের রং বিভিন্ন রকম হবে
  • শরীরে এলার্জির পরিমাণ বেড়ে যাবে।শরীরে বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হবে
  • ঘুম কম হবে
  • শরীর সবসময় ক্লান্ত ও দূর্বল লাগবে।কোনও কাজ করতে ভালো লাগবে না 
  • মাঝেমধ্যে মাথা ব্যাথা করবে
  • প্রসাবের সাথে রক্ত বের হতে পারে 
  • কিডনির আশে পাশের জায়গায় ব্যাথা অনুভব করবেন
  • আপনার শরীরের ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাবে  
কিডনি রোগের ঝুঁকি

অসচেতনতার অভাবে কিডনি রোগ অনেকের হতে পারে।কিছু লোক আছে যাদের কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০-৬০ মধ্যে।   

যারা ডায়াবেটিস,হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপে ভুগে তাদের কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভবনা বেশি।যারা ব্যাথানাশক ঔষধ অতিরিক্ত সেবন করে তাদের কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।এছাড়াও যাদের কিডনিতে পাথর ও প্রসাবে ইনফেকশন আছে তাদের কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।  

কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায় 

কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

১. ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের সাবধান হতে হবে।যাতে এসব সমস্যা বেড়ে না যায়।এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে ও ঔষধ সেবন করতে হবে।

২. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. অতিরিক্ত ব্যাথানাশক ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. প্রসাব ঘন ঘন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৫. প্রসাবের সাথে রক্ত বের হলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার কাছে যাবেন।       

৬. খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমে দিতে হবে।

৭. শরীরের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে দ্রুত কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।  

৮. ধুমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।   

৯. শরীরে এলার্জি থাকলে এলার্জি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

কিডনি রোগ প্রতিকার

কিডনি রোগ প্রতিকারে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা নিচে দেওয়া হলোঃ

পানি

কিডনিকে সুস্থ রাখতে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।পানি শরীরের বর্জ্য পদার্থকে মূত্রের সাথে বাইরে বের করে দেয়।এজন্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিনিয়ত ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করতে বলে।রাতের চেয়ে দিনের বেলা বেশি পানি খাওয়ার দিকে মনযোগ দিবেন।

আদা

কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায়,কিডনি রোগের কারন,কিডনি রোগের লক্ষণ কি কি,কিডনি রোগের চিকিৎসা,কিডনি রোগী কি কি ফল খেতে পারবে,কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা,কিডনি রোগ কেন হয়,কিডনি রোগীর ব্যায়াম,


আদা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগকে প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে।আদা তরকারিতে খাওয়ার চেয়ে কাঁচা খাওয়া অনেক ভালো।চায়ের সাথে খেলে বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।আদাতে থাকা zinzoros কিডনিতে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংসে কাজ করে। 

হলুদ

প্রতিদিনের খাবারের আমরা হলুদ ব্যবহার করে থাকি।হলুদে এন্টি-ফাঙ্গাল বিদ্যমান থাকে।যা কিডনির বিভিন্ন ইনফেকশনকে হাত থেকে রক্ষা করে।

আপেল সিডার ভিনেগার   

আপেল সিডার ভিনেগারে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও ম্যালিক এসিড বিদ্যমান।কিডনির একটি সমস্যা হচ্ছে ইউরিনারি ব্লাডার ইনফেকশন।এই সমস্যাকে দূর করতে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল ভালো কাজ করে।প্রতিদিন ২ চামচ করে আপেল সিডার ভিনেগার খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

আশা করি আজকের পোস্ট হতে আপনারা কিডনির বিভিন্ন রোগ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।                         

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন