আমাদের দেশের ৬ টি ঋতুর মধ্যে অন্যতম একটা ঋতু হচ্ছে শীতকাল।শীতকাল আসলেই প্রচন্ড শীতে সকলের শরীর কাঁপতে থাকে।শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে।এজন্য এই সময় রাস্তা ঘাটে বেশিভাগ সময় ধুলোবালি উড়তে থাকে।এই ধুলোবালি থেকে শরীরের বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে।এই সময় শরীরের সঠিক যত্ন না নিলে শরীরে বিভিন্ন রোগসহ চেহেরা নষ্ট হয়ে যায়।
শীতকালের প্রধান যেসব রোগ দেখা দেয় তাদের মধ্যে অন্যতম হলোঃ সর্দি-কাশি,জ্বর,শ্বাসকষ্ট,হাঁপানী,নিউমোনিয়া,হাত-পা ফাটা,অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে।শীতকালে এসব রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনার দরকার হবে পুষ্টিকর ও সঠিক খাদ্য।আজকে আমরা কথা বলব শরীর সুস্থ রাখতে যেসব পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করবেন।
শীতকালে স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
মধু
আমাদের দেশের একটা প্রাকৃতিক খাদ্যের নাম হচ্ছে মধু। প্রায় ৪৫ টি খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ একটা খাদ্যের হচ্ছে মধু।মধুতে এন্টি-অক্সিডেন্ট সহ বিভিন্ন ভিটামিন,খনিজ লবণ,অ্যামাইনো এসিড,গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ বিদ্যমান।প্রতিনিয়ত মধু খাওয়ার উপকারীতা অনেক।মধুতে থাকা এন্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলে।মধুতে থাকা গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ আমাদের শরীর গরম রাখতে ও শক্তি যোগাতে সহায়তা করে।এছাড়াও প্রতিদিন মধু খেলে শারীরিক দূর্বলতাসহ ও যৌন দূর্বলতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।শীতকালে চিনির বিকল্প হিসেবে মধু খেতে পারেন।এজন্য অবশ্যই আপনাকে খাঁটি মধু খেতে হবে।বাজারে অনেক লোকাল মধু পাওয়া যায় সেগুলো খাওয়ার চেয়ে না খাওয়াই ভালো।
আরও পড়ুন
২০৫০ সালে যেসব খাবার মানুষ খেতে শুরু করবে
ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবার
শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের ত্বক খসখসে হয়ে যায়।এই খসখসে ত্বককে সতেজ রাখতে প্রয়োজন হয় ফ্যাটি এসিডের।যেসব খাবারের মধ্যে ফ্যাটি এসিড বিদ্যমান তাহলোঃ পাঙ্গাস,ইলিশ,বাদাম ও সবুজ শাক-সবজি।এজন্য এই খাদ্য গুলো বেশি বেশি করে খেতে হবে।
মৌসুমী ফল খান
আমাদের দেশে শীতকালে নানা রকম ফল হয়ে থাকে।মৌসুমি ফল যেমন- আপেল,কমলা,মাল্টা,বড়ই ও জলপাইতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে বায়োটিন,ফাইবার ও এন্টি-অক্সিডেন্ট।ফাইবার দ্রুত খাদ্য হজমে সহায়তা করে আর এন্টি-অক্সিডেন্ট শরীর সতেজ রাখতে সাহায্য করে।আর বায়োটিন চুল ও ত্বককে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ঘি
শীতকালে শরীর ভালো রাখতে ঘি খেতে পারেন।ঘি তে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।অতিরিক্ত ঘি খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে তাই অল্প পরিমাণে ঘি খেতে হবে।শীতকালে ঘি খেলে আপনার শরীর গরম রাখতে সাহায্য করবে।
খেজুর
শীতকালে স্বাস্থ্যকর ও ভালো একটা খাদ্য হতে পারে খেজুর।খেজুর একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার।খেজুরে থাকা পটাশিয়াম দেহের উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনে।নিয়মিত খেজুর খেলে দেহের খারাপ কলেস্টোরলকে ধ্বংস করে ও নতুন কলেস্টোরল এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলে।শীতকালে খেজুর খেলে আপনার শরীর ভেতর থেকে গরম রাখতে সাহায্য করবে।
তুলসি পাতা
শীতকালে শরীর ভালো রাখতে প্রতিদিন দুই একটা করে তুলসি পাতা খেতে পারেন।তুলসি পাতার রয়েছে বিভিন্ন ঔষধি গুণ।তুলসি পাতা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি,কোষ্ঠকাঠিন্য,ক্যান্সার কোষ ধ্বংস,জ্বর,সর্দি ও কাশি নিরাময়ে খুবই উপকারী।শীতের দিন সকালবেলা এক কাপ চায়ের সাথে তুলসি পাতা মিশিয়ে খেতে পারেন।
শাক সবজি
শীতকালে অনেক ধরনের শাক সবজি পাওয়া যায়।বাধাকপি,ফুলকপি,মুলা,টমেটো গাজর,ওলকপি,ধুনিয়া পাতা,পালংশাক,লালশাক ইত্যাদি।এগুলোতে আছে প্রচুর পরিমানে এন্টি-অক্সিডেন্ট।যা আমাদের দেহকে সুস্থ ও সজিব রাখে।
লেবু
লেবু খাওয়ার উপকারীতা অনেক।লেবু খেলে আমাদের যেসব উপকার হয়- হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়,ক্ষত দুর করতে সাহায্য করে,পেট পরিষ্কার রাখে,ত্বক দাগ মুক্ত রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।তাই শরীরকে ভালো রাখতে শীতকালে লেবুর শরবত খাওয়া যেতে পারে।
পানি
পানি আমাদের শরীরের জন্য খুবই একটা উপকারী উপাদান।শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে।এই সময় প্রচন্ড শীতে মনুষ কম পানি পান করে এতে শরীর আরও রুক্ষ হয়ে যায়।এই সময় আপনার শরীর সুস্থ ও সজীব রাখতে ঠাণ্ডা পানি পান করতে সমস্যা হলে কুসুম কুসুম গরম পানি পান করার চেষ্টা করবেন।
শীতকালে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও বিভিন্ন রোগ হতে মুক্তি লাভ করতে এই খাদ্য গুলোই একজন মানুষের জন্য যথেষ্ট।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন