আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটা খনিজ উপাদানের নাম হচ্ছে (Iron) আয়রন।বিশেষকরে আমাদের শরীরের রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে আয়রন খুবই দরকারী।

আয়রন-সমৃদ্ধ-খাবার,আয়রন-সমৃদ্ধ-ফল,আয়রনের-অভাবে-কি-হয়,আয়র-জাতীয়-খাবার,আয়রন-সমৃদ্ধ-খাবার-তালিকা,আয়রন-জাতীয়-মাছ,আয়রন-সমৃদ্ধ-খাবার-কি-কি,আয়রন-যুক্ত-ফল-কি-কি,কোন-কোন-খাবারে-আয়রন-আছে,আয়রন-যুক্ত-খাবার-কি-কি,আয়রন-জাতীয়-ফল,

 

বয়স অনুযায়ী আয়রনের চাহিদা

বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য  বিভিন্ন রকম আয়রনের চাহিদা হতে পারে।নিচে কার কেমন আয়রনের চাহিদা তা দেওয়া হলঃ   

  • ১ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ১১ মিলিগ্রাম
  • ১ থেকে ৩ বছরের শিশুর জন্য ৭ মিলিগ্রাম
  • ৪ থেকে ৮ বছরের শিশুর জন্য ১০ মিলিগ্রাম
  • ৯ থেকে ১৩ বছরের শিশুদের জন্য ৮ মিলিগ্রাম   
  • ১৪ থেকে ১৮ বছর ছেলেদের ১১ মিলিগ্রাম ও মেয়েদের ১৫ মিলিগ্রাম 
  • ১৯ থেকে ৫০ বছর পুরুষদের ৮ মিলিগ্রাম ও মহিলাদের ১৮ মিলিগ্রাম
  • ৫০ বছরের উপরে সকলের জন্য ৮ মিলিগ্রাম
  • আর গর্ভবতী মহিলারদের জন্য ২৭ মিলিগ্রাম 

আয়রন এর অভাবে কি হয়?

মাহবদেহে রক্তে হিমোগ্লোবিন এর স্বাভাবিক মাত্রা ১৩ গ্রাম পার ডেসিলিটার ধরা হয়ে থাকে।এই মাত্রা যদি কোনও ভাবে ১০ গ্রাম এর নিচে আসে তাহলে বুঝা হয় যে লোকটার রক্তস্বল্পতা রয়েছে।আয়রনের অভাবে শরীরে নানারকম রোগ হতে পারে।

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরও শরীর ক্লান্ত লাগা
  • শরীর সবসময় দূর্বল লাগা
  • কোনও কাজে মনযোগ না আসা
  • স্মৃতিশক্তি কমে আসা
  • রক্তস্বল্পতা
  • চেহেরা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
  • হাত ও পায়ের নখে সমস্যা হওয়া 

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার তালিকা

আমাদের দেশের মানুষ পুষ্টিকর খাবার খুব কম খায়।আর এজন্য তাদের আয়রনের ঘাটতি হয়ে থাকে।কিছু সহজলভ্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার নিচে দেওয়া হলোঃ 

গরুর মাংস

মাংস খেতে গেলে আমরা বেশিরভাগ সময় গরুর মাংস খেয়ে থাকি।গরুর মাংস একটি সুস্বাদু খাবার।প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান।একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৩০০ গ্রাম গরুর মাংস খেলে দিনের আয়রনের চাহিদা পূর্ণ হবে।

গরুর মাংসে আয়রন আছে বলে যে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া যাবে তা কিন্তু নয়।অনেকে আছে কোষ্ঠকাঠিন্য ও এলার্জি জনিত রোগে ভূগে।তারা গরুর মাংস বেশি খেলে হীতে বিপরীত হতে পারে।

ডিমের কুসুম 

আমরা সকলেই ডিম খেতে ভালোবাসি।কেউ এমনও আছে যে প্রতিদিন ২-৩ টা ডিম খায়।ডিমের কুসুমে (হলুদ অংশে) প্রোটিন ও আয়রন প্রচুর পরিমানে থাকে।প্রতিটা ডিমের কুসুমে ০.৬৫ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান।

আর ও পড়ুন 

ভিটামিন বি জাতীয় খাবার তালিকা     

প্রচন্ড গরমে যেসব খাবার খাবেন   

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির খাবার তালিকা       

কলিজা

আয়রনের প্রধান উৎস বলা হয় কলিজাকে।কারণ গরু ও মুরগির কলিজাতে প্রচুর পরিমানে আয়রন পাওয়া যায়।

প্রতি ১০০ গ্রাম মুরগির কলিজাতে ৯ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান থাকে।যা খেলে একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দৈহিক আয়রনের চাহিদা পূর্ণ হয়।এছাড়া গরুর কলিজাতে ৫ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান থাকে।

সামুদ্রিক মাছ

সামুদ্রিক মাছ বিশেষ করে হার্টের রোগীর জন্য খুবই উপকারী।কারণ সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।এছাড়া সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমানে আয়রন পাওয়া যায়।প্রতি ১০০ গ্রাম সামুদ্রিক মাছ হতে ২.৫ থেকে ৩ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। 

পালংশাক

আয়রন-সমৃদ্ধ-খাবার,আয়রন-সমৃদ্ধ-ফল,আয়রনের-অভাবে-কি-হয়,আয়র-জাতীয়-খাবার,আয়রন-সমৃদ্ধ-খাবার-তালিকা,আয়রন-জাতীয়-মাছ,আয়রন-সমৃদ্ধ-খাবার-কি-কি,আয়রন-যুক্ত-ফল-কি-কি,কোন-কোন-খাবারে-আয়রন-আছে,আয়রন-যুক্ত-খাবার-কি-কি,আয়রন-জাতীয়-ফল,


আমাদের দেশে পাওয়া সব ধরনের সবুজ শাকসবজিতে আয়রন পাওয়া যায়।এরমধ্যে পালংশাকে সবচেয়ে বেশি আয়রন পাওয়া যায়।এছাড়াও পালংশাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি বিদ্যমান থাকে।প্রতি ১০০ গ্রাম পালংশাকে ৩ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান থাকে।  

শিমের বীজ

একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার হচ্ছে শিমের বিচি।শিমের বিচ্চিতে আয়রন,ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন বিদ্যমান থাকে।প্রতি ১০০ গ্রাম শিমের বিচির মধ্যে ৩ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়।

মুরগির মাংস

আমাদের দেশে গৃহপালিত পাখি গুলোর মধ্যে মুরগী অন্যতম।মুরগী মাংস সহজলভ্য ও তুলনামূলক সস্তা হয়ে থাকে।তাই চাইলে যে কেউ মুরগীর মাংস খেতে পারে।মুরগীর মাংস হতে আয়রন ও প্রোটিন প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়।প্রতি ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসে ১.৩০ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান।

বাদাম

আয়রন সমৃদ্ধ সবজি,আয়রন যুক্ত খাবার এর তালিকা,আয়রনের অভাবজনিত রোগ,আয়রন,আয়রন ও ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার,আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা,গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার,আয়রন যুক্ত সবজি,আয়রনের ঘাটতি হলে কি হয়,দুধে কি আয়রন আছে,


আমাদের দেশে অনেক ধরনের বাদাম পাওয়া যায়।এর মধ্যে কাজুবাদাম ও চিনাবাদাম অন্যতম।বিশেষকরে কাজুবাদামে প্রচুর পরিমানে আয়রন পাওয়া যায়।

প্রতি ১০০ গ্রাম কাজুবাদামে ৬.৫৬ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান থাকে।অন্যদিকে চিনাবাদাম এ মাত্র ২ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান থাকে।        

কুমড়ার বিচি

কুমড়ার বিচি খাবার হিসেবে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হয়।কুমড়ার বিচি ভাজা করে খেতে সকলেই ভালোবাসে।প্রতি ১০০ গ্রাম কুমড়ার বিচি হতে ৮ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যেতে পারে।

মশুর ডাল

আমাদের দেশে অনেক ধরনের ডাল পাওয়া যায়।ডাল খেতে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হয়।কারণ ডাল হতে প্রচুর পরিমানে আয়রন ও আমিষ পাওয়া যায়।প্রতি ১০০ গ্রাম মশুর ডাল হতে ৪.৬ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। 

খেজুর

আমরা সকলেই খেজুর খেতে ভালোবাসি।এর কারণ খেজুর হচ্ছে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার।খেজুরে আয়রন ছাড়াও প্রচুর পরিমানে অন্যান্য খনিজ পদার্থ বিদ্যমান আছে।প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে ২ মিলিগ্রাম এর বেশি আয়রন থাকে। 

আয়রন এর চাহিদা পূরণে যে কেউ এই খাদ্যগুলো গ্রহণ করতে পারে।আয়রনের ঘাটতির কারণে কারও সমস্যা গুরুত্বর হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।      

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন