চুল পড়া বন্ধের উপায়
আমাদের শরীরের সৌন্দর্যের একটা অংশ হচ্ছে মাথার চুল।এই চুল যে কতটা আমাদের জন্য দরকারী সেটা যাদের মাথায় অর্ধেক চুল নাই তারাই ভালো জানে।আমাদের অযত্নেই এই চুলগুলো ঝড়ে পড়তেছে।আজকে আমরা আলোচনা করব কীভাবে চুল ঘন,কালো ও মজবুদ করবেন।
চুল পড়ার কারণ কী
সাধারণত আমাদের চুল অনেক কারণে ঝড়তে পারে।
চুল ভেজা অবস্থায় আছড়ানো
আমাদের অনেকের মধ্যে এই বদ অভ্যাসটা আছে যে গোসল করার পর এসে চিরুনী দিয়ে চুল আছড়াতে শুরু করে দেয়।ফলে তাদের চুল পড়তে শুরু করে দেয়।কারণ ভেজা অবস্থায় চুল অনেক নরম থাকে ও মোড়ানো থাকে।চুল ঝড়া রোধ করতে চাইলে কখনেই গোসল করে এসে চুল আছড়াতে যাবেন না।
চুল টাইট করে বাঁধা
আমরা অনেক মহিলা মানুষ হেয়ারস্টাইল করার জন্য চুলে খোপা বেঁধে রাখি।এভাবে দীর্ঘক্ষণ খোপা বেঁধে রাখলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়।ফলে চুল পড়তে শুরু করে দেয়।আপনি যদি হেয়ার স্টাইল করতে চান তাহলে সাময়িক কিছু সময়ের জন্য খোপা বেঁধে রাখতে পারেন।তারপর খোপা খুলে চুল সোজা করে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন
চুলে হিট দেওয়া
আমরা চুল শুকাতে প্রকৃতির আবহাওয়া বাদ দিয়ে যন্ত্রের সাহায্য নেই।আমরা অনেকে চুল শুকানোর হেয়ার হিটার ব্যবহার করে থাকি।চুলে অতিরিক্ত হিট দেওয়ার কারণে চুল গুলো এলোমেলো ও ভেঙ্গে যায়।ফলে চুল পড়তে শুরু করে।চুল পড়া রোধ করলেই চাইলে এগুলো জিনিসের ব্যবহার বাদ দিতে হবে।
চুলে কেমিক্যাল ব্যবহার
আমরা চুলে বিভিন্ন কালার করতে চুল সোজা করতে অনেক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকি।এগুলো অতিরিক্ত ব্যবহার করলে আমাদের চুল ঝড়তে শুরু করে দেয়।এগুলো যত সম্ভব ব্যবহার না করার চেষ্টা করবেন।
চুলের যত্ন না নেওয়া
আমরা এমনও লোক আছি যারা সপ্তাহে একবার ও চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করি না।অনেকে শ্যাম্পু ব্যবহার করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করি না।এর ফলে আমাদের চুল পড়তে শুরু করে।চুলের সঠিক যত্ন না নিলে চুল পড়া রোধ করা অসম্ভব।
চুল কালো ও মজবুদ করার কিছু খাবার
বাদাম
আমাদের দেশে অনেক ধরনের বাদাম পাওয়া যায়।তারমধ্যে চিনাবাদাম,কাঠবাদাম,কাজুবাদাম অন্যতম।এসব বাদামে রয়েছে (Omega-6 Fat) যা চুল শক্ত ও লম্বা করতে সাহায্য করে।আমাদের শরীর (omega-6 fat) নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না।এটা খাবার থেকে শোষণ করে থাকে।এটার অভাব হলে চুল পড়া শুরু করে।যাদের চুল অল্পতেই পড়ে যায় বা চুল খাটো তারা প্রতিদিনের খাবার রুটিনে কিছু পরিমাণ বাদাম রাখতে পারেন।বাদাম অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না।কারণ বাদামে রয়েছে চর্বি।যা দেহের ওজন বাড়িয়ে তুলতে পারে।
গাজর,পেঁপে,আম
চুলের গোড়া সতেজ ও ঠিক রাখতে দরকার হয় 'ভিটামিন এ'।'ভিটামিন এ' এর অন্যতম উৎস হচ্ছে হলুদ রং এর ফলমুল।যেমন আম,পেঁপে,গাজর,মিষ্টি আলু,মিষ্টি কুমড়া।চুল ভালো রাখতে প্রতিনিয়ত হালকা পরিমাণে 'ভিটামিন এ' জাতীয় খাবার খেতে হবে।
মাছ
চুল ঘন ও কালো করার জন্য শরীরের প্রয়োজন (omega-3 fat)। আর এই (omega-3 fat) ভালো উৎস হচ্ছে কিছু মাছ।যেমন, সামুদ্রিক মাছ হিসেবে টুনা ও সেমন মাছ।আর দেশি মাছ হিসেবে ইলিশ,কই,মোলা,চাপিলা।এগুলো মাছের মধ্যে যেগুলো আপনার কিনতে ও খেতে সুবিধা হবে সেগুলো খেতে পারেন।
ডিম
আমাদের চুল প্রোটিন এর তৈরি।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রোটিনের অভাবে চুল পড়া ও চুল এলোমেলো দেখায়।চুল ভালো ও সুন্দর রাখতে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে।এর জন্য প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একবার হলেও ডিম রাখবেন।
ডাল
ডাল আমাদের সুন্দর চুলের জন্য খুবই উপকারী।ডালে রয়েছে প্রোটিন ও প্রচুর পরিমানে আয়রন।আয়রন আমাদের মাথার তালুতে রক্ত সঞ্চালন করে চুলের গোড়ায় অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে।এতে চুল ভালো ও সতেজ থাকে।
চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন
টক জাতীয় খাবার একমাত্র 'ভিটামিন-সি' এর উৎস।কমলা,লেবু,মালতা,বড়ই,তেঁতুল এ প্রচুর পরিমানে 'ভিটামিন-সি' থাকে।যা আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী।'ভিটামিন-সি' এর অভাব হলে চুল বেকে যাওয়া, কোকড়ানো,খসখসে হওয়া সমস্যা হয়। চুল সোজা ও শক্তিশালী রাখতে 'ভিটামিন-সি' জাতীয় খাবার খেতে হবে।
উপরের দেখানো সবকিছু কেউ যদি ২ সপ্তাহ ধরে অনুসরণ করে তাহলে তার চুলে সে অবিশ্বাস্য পরিবর্তন দেখতে পাবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন