২০৫০ সালের খাদ্য তালিকা
পৃথিবীতে যেকোনও প্রাণী বা জীব বসবাস করুক না কেন তাকে অবশ্যই খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকতে হবে।আমাদের ক্ষুধা লাগে তাই আমরা খাদ্য গ্রহণ করি।শুধু খাদ্য হলেই হবে না খাদ্য অবশ্যই পুষ্টিকর হতে হবে যা থেকে আমরা তাপ ও শক্তি পাই।আমরা আগে যা খেয়েছি সেই খাবার আগের তুলনায় অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে ভবিষ্যতে খাবার আরও পরিবর্তন হবে।
২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে জনসংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।সেই তুলনায় খাদ্য ও বাড়াতে হবে।বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেন কয়েক মাসের যুদ্ধের কারণে খাদ্যের দাম সারা পৃথিবীতে আকাশ চুম্বি হয়েছে।
মানুষের নিজস্ব অপকর্মের ফলে জলবায়ু দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে।জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কোনও দেশে অতিরিক্ত পরিমাণে খরা হচ্ছে।কোনও দেশে অতিবৃষ্টি হচ্ছে।যারফলে ফসলের মাঠ-ঘাট,জনজীবন ও বাড়িঘর ক্ষতির সমুখীন হচ্ছে।আবার কোনও দেশ মরুভুমিতে পরিণত হচ্ছে।এসব সমস্যার কারণে ফসল উৎপাদন ঠিক মতো হচ্ছে না অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।সামনের দশক গুলোতে জলবায়ু আরও ভয়ংকর রূপ নেবে।এই সংকট মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা খাদ্যে নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছে।নিচে বিজ্ঞানীদের গবেষণা করা কয়েকটি খাদ্য তুলে ধরা হলো।
কালচার থেকে তৈরি মাংস
কালচার করা মাংস বিভিন্ন ল্যাব এ তৈরি করা হয়।এটি ল্যাব এ তৈরি করা হলেও সত্যিকারের মাংসে পরিণত হয়।এই মাংস তরকারি হিসেবে,বার্গার ও বিরিয়ানিতে ব্যবহার করা যাবে।এই কালচার করা মাংস তৈরি করতে প্রথমে খাওয়ার উপযোগী প্রাণী হতে কিছু 'কোষ' নেওয়া হয়।তারপর এই কোষগুলো বায়োরিঅ্যাক্টরে রাখা হয়।সেখানে কোষগুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে টিস্যুতে পরিণত হয়।তারপর কয়েক সপ্তাহ পর খাওয়ার উপযোগী মাংসে পরিণত হয়।এই প্রক্রিয়াটি করতে কোনও প্রাণী জবাই বা হত্যা করতে হয় না।তাই এটি ভবিষ্যতে একটা দারুণ খাবার হবে।
প্যান্ডানাস
প্যান্ডানাস (pandanus) এক ধরনের ছোট ছোট গাছ।এই গাছের পাতা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য দ্রব্যে ব্যবহৃত হয়।এই প্যান্ডানাস গাছের ফল দেখতে অনেকটা আনারসের মতো।কিন্তু খেতে আনারসের মতো না।এটি রান্না করে তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়।প্যান্ডানাস প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত এলাকায় জন্মে থাকে।
এই গাছ খরা,অতিবৃষ্টি ও জলবায়ুর উষ্ণতাকে সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে।যেহেতু ভবিষ্যতে জলবায়ু খারাপ আকার ধারণ করবে তাই এই গাছ ভবিষ্যতে ব্যাপক হারে চাষ করা হবে।আশে পাশের জায়গা ফেলে না রেখে প্যান্ডানাস চাষ করতে হবে।
গবেষক গমেজের মতে, প্যান্ডানাস একটি পুষ্টিকর ও জলবায়ু সহনীয় খাবার।
আরও পড়ুন
ফোনিও
আয়রন,জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ একটি খাবার হচ্ছে ফোনিও।ফোনিওকে আবার বন্য ঘাস ও বলা হয়।ফোনিও আফ্রিকান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় একটি খাবার।ফোনিও বিভিন্ন খাবার ও পানীয় দ্রব্যে ব্যবহৃত হয়।এটি মরুভূমিতে বেশি জন্মায়।এটি যেকোনও প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।ভবিষ্যতের খাবার হিসেবে মানুষ এই ফোনিও খাবে।
মটরশুঁটি
মটরশুঁটি একটি ডাল জাতীয় ও গোলাকার বীজ সমৃদ্ধ একটি উদ্ভিদ।মটরশুঁটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন ও ভিটামিন বি।এটি তুলনামূলক সস্তা ও খুব সহজে পাওয়া যায়।এটিতে ক্যালোরির পরিমাণ তুলনামূলক কম থাকে।যারফলে অতিরিক্ত খেতে পারবেন এতে আপনার পেট দীর্ঘক্ষণের জন্য ভরা থাকবে।এটি যেকোনও প্রতিকূল পরিবেশে চাষ করা সম্ভব।
সামুদ্রিক শৈবাল
'শৈবাল' নাম শুনে অবাক লাগলেও বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় মানুষ কয়েক দশক পর শৈবাল খেতে শুরু করবে।বর্তমানে বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে শৈবাল ব্যবহার করা হচ্ছে।শৈবাল আয়রণ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি খাবার।
নকল কলা
এনসেট একটি ইথিওপিয়ান জাতীয় নকল কলা।এটা কলার প্রজাতির কাছাকাছি একটা ফল।বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় এটি সুপারফুড হিসেবে কাজ করবে।বিভিন্ন গবেষকদের মতে নকল কলা দিয়ে পৃথিবীর ১০ কোটির বেশি মানুষকে খাওয়া সম্ভব।
জেলফিশ
জেলফিশ এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে খাওয়া হলেও সারা পৃথিবীতে এটি খাওয়ার লোক খুবই কম।কম চর্বি,আমিষ ও খনিজ সমৃদ্ধ একটি খাদ্য হচ্ছে জেলফিশ।খাদ্য সংকট মোকাবিলায় মানুষ এটি খাদ্য তালিকায় নিয়েছে গবেষকরা।
বিভিন্ন গবেষকদের ধারণা অনুযায়ী এই খাদ্য গুলো মানুষ কয়েক দশকের মধ্যে খেতে শুরু করে দিবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন