|
যেসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর |
বেঁচে থাকার জন্য একজন মানুষের খাদ্য অবশ্যই প্রয়োজন।খাদ্য না খেয়ে কোনও মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ চাল,ডাল,মাছ,মাংসসহ অনেক রকমের খাদ্য খেয়ে থাকে। এই খাবারই হতে পারে মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ। এই খাবার সঠিকভাবে না খেলে হতে পারে মৃত্যুর কারণ। এই খাবারগুলো আমরা প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকি কিন্তু জানিনা যে এই খাবারগুলোই হতে পারে আমাদের মৃত্যুর কারণ। কোন কোন খাবার খেলে সাথে সাথে মৃত্যু না হলেও আপনার শরীরের জন্য হতে পারে ভয়ংকর। এইরকম কয়েকটি খাবার নিয়ে আজকে আলোচনা করব। মাশরুম
|
মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা |
পৃথিবীর অনেক দেশেই মাশরুম একটি জনপ্রিয় ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। মাশরুম খেলে রক্তচাপ কমে আসে,কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়,টিউমার জাতীয় কোষ ধ্বংশ করে,বাত-ব্যথা দূর করতে ও হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
প্রকৃতিতে মাশরুমের হাজার জাত থাকলেও বাংলাদেশে চাষ হয় মাত্র ৮-১০ টি জাত। ব্যাঙের ছাতার মতো বুনো মাশরুমে ক্ষতিকর ছত্রাক থাকে যা খেলে মানুষের লিভার ও কিডনীর ক্ষতি হতে পারে। অবশ্যই মাশরুম খাওয়ার সময় এই মাশরুমটি দেখে শুনে খেতে হবে।
আলু
|
আলু খেলে কী হয় |
বাংলাদেশের মানুষের মাঝে আলু একটি প্রধান খাদ্য।আমরা প্রায় প্রতিনিয়ত আলু খেয়ে থাকি। কিন্তু এই আলুর কিছু ক্ষতিকর অংশ খেয়ে ফেললে হতে পারে আমাদের জন্য ভয়ংকর ক্ষতি।
আলুতে শেকড়ের জন্ম হলে গ্লাইকোঅ্যালকালয়েড নামের এক ধরনের উপাদান তৈরি হয়।দীর্ঘদিন আলু পড়ে থাকলে সাধারণত এই উপাদানের তৈরি হয়।আলুতে শেকড় জন্মানোর সময় যে লাল অংশগুলো থাকে সেখানে এই উপাদানের উপস্থিতি বেশি থাকে।
এই গ্লাইকোঅ্যালকালয়েড মানুষের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে প্রবেশ করলে ডায়রিয়া,মাথাব্যথাসহ মানুষের মৃত্যু ও হতে পারে।
অনেক সময় আলু পড়ে থাকলে সবুজ রং এর উপাদানের সৃষ্টি হয়। এই উপাদানের নাম হচ্ছে কার্সিনোজেন। যা খেলে ক্যান্সার হতে পারে।এই ধরনের আলু খাওয়া মোটেও উচিত নয়।
খেসারি ডাল
|
খেসারি ডালের ক্ষতিকর দিক |
আমরা মাঝে মাঝে ডাল-ভাত খেয়ে থাকি। বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য তালিকায় মুশুর ও মুগ ডালের পাশাপাশি খেসারির ডাল ও থাকে। খেসারি ডালে (BOAA) নামের এক ধরনের অ্যালানাইন অ্যামিনো এসিড থাকে। এই উপাদান বিষাক্ত নিউরোটক্সিন তৈরি করে পারে। এই অ্যাসিড মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা ও স্নায়ুবিক পঙ্গুত্ব তৈরি করতে পারে।এই রোগের লক্ষণ হটাৎ করেই দেখা দিতে পারে।হাঁটাচলা করার সময় পা আটকে যাওয়া বা অবশ হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে খেসারি ডাল খেলে এই রোগ হতে পারে বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
পটকা মাছ
|
পটকা মাছ খাওয়ার নিয়ম |
বাংলাদেশ,চীন,জাপানসহ আরও অনেক দেশে জনপ্রিয় একটি মাছের নাম হচ্ছে পটকা মাছ।কিন্তু এতো জনপ্রিয় মাছই হতে পারে আপনার মৃত্যুর কারণ।পটকা মাছ সঠিক ভাবে কাটাই-বাচাই করতে না পারলেই এই সমস্যা। পটকা মাছের শরীরে থাকে বিষাক্ত নিউরোটক্সিন যা সায়ানাইট বিষের চেয়েও বেশি কার্যকর হতে পারে।
পটকা মাছ এমনিতেই ক্ষতিকর না। এর শরীরের বিষাক্ত অংশটি রয়ে গেলে তা কোনভাবে মানুষের পাকস্থলীর মধ্যে প্রবেশ করলে তা হতে পারে মানুষের তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কারণ।তাই পটকা মাছ খাওয়ার সময় এই অংশটি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
টমেটো
|
টমেটোর উপকারিতা |
বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টমেটোর চাষ করা হয়।টমেটো প্রায় সকলেই খেতে ভালোবাসে।
টমেটো গাছের পাতা ও কাণ্ড এক ধরনের অ্যালকালাইক নামের উপাদান থাকে। কাঁচা টমেটোর ভিতর এই উপাদান থাকে বলে মনে করা হয়।এই কারণে ভালো করে রান্না না করে কাঁচা টমেটো না খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টবিদরা।এই কাঁচা টমেটো অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে মানুষের পাকস্থলীর নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
আপেল
|
আপেলের ক্ষতিকর দিক সমূহ |
আমরা সকলেই নাস্তার খাবার হিসেবে আপেল খেয়ে থাকি।আপেল খাওয়ার সময় আমরা আপেলের বিচিসহ খেয়ে ফেলি।যার জন্য আমাদের বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে।কারণ আপেলের বিচির ভিতর খানিকটা পরিমাণ সায়ানাইড থাকে। যা অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে ফেললে মানুষের মৃত্যুর মতো সায়ানাইড তৈরি হতে পারে।আপেলর বিচি বাদে অন্যান্য অংশ খেলে অনেক উপকার আছে।
মধু
|
মধুর উপকারিতা |
বাংলাদেশে শীতের মৌসুমে মৌ-মাছিরা মধুর চাক তৈরি করে থাকে।কারণ এই সময় প্রচুর পরিমানে শরিষা ক্ষেত থাকে।যা থেকে মৌ-মাছিরা মধু তৈরি করে থাকে।আমরা অনেকেই আছি মৌ-চাক কাটার সাথে সাথে মধু খাই।এর ফলে আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যা হয়।কারণ এই মধু প্রক্রিয়া জাত না করলে নানা রকম বিষাক্ত উপাদান থেকে যায়।যা খেলে ডায়রিয়া,পেটব্যথা,মাথাঘোরা ও বমি বমি ভাবের মতো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।মধু খাওয়ার আগে ভালোভাবে প্রক্রিয়াজাত করে নিতে হবে।
শিমের বিচি
|
শিমের বিচি কাচা খেলে যা হয় |
আমরা প্রায় সকলেই শিমের বিচি খেতে পছন্দ করি।শিমের বিচি একটি সুন্দর ও সুস্বাদু খাবার।কিন্তু শিমের বিচি খেতে হলে অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে।
শিমের বিচির মধ্যে ফাইটোহেমাগ্লুটিনিন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে যা অনেকের শরীরের জন্য নানা রকম ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।এজন্য শিমের বিচি রান্না করার আগে ১৫ মিনিট ধরে পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে।তাহলে শরীরের জন্য ক্ষতির সম্ভবনা খুব কম থাকবে।
কামরাঙ্গা
|
কামরাঙ্গা খেলে কী হয় |
কামরাঙ্গা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ফল।এই ফল খেতে অনেকটা টক জাতীয়।এই ফলে তেমন কোনও ক্ষতিকারক উপাদান নাই।কিন্তু যাদের কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা আছে তারা খেলে ক্ষতি হতে পারে।
কচু
|
কচুর উপকারিতা |
কচু বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সবজি ও কচুর পাতা শাক হিসেবে পরিচিত।কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন।কচু যদি ছায়াযুক্ত স্থানে জল্মায় তাহলে সেই কচু খাওয়া যাবে না।কারণ কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অক্সালেট। কচু ছায়াযুক্ত স্থানে জল্মালে সেখানে এমন এক পদার্থের সৃষ্টি হয় যা খেলে মানুষের এলার্জি,চুলকানি,গলাফুলা এমনকি মৃত্যু ও হতে পারে।সুতরাং কচু খাওয়ার সময় অবশ্যই লেবু খেতে হবে।
ডিম
|
ডিমের অপকারিতা |
ডিম আমাদের প্রায় সকলেরই একটি প্রিয় খাবার।কাঁচা ডিম ও আধা সিদ্ধ ডিম খেলে আপনি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।কাঁচা ডিম খেলে বমি বমি ভাব,মাথা ঘোরা ও পেটের নানারকম সমস্যা হতে পারে। আর গর্ভবতী মহিলাদের তো একদমই কাঁচা ডিম খাওয়া যাবে না।
পরিশেষে বলতে গেলে প্রতিদিনের খাওয়া এই খাদ্যগুলো অবশ্যই দেখে শুনে খাবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন